গগনচুম্বী সাফল্য দিগন্তজোড়া এক কীর্তিতে ! দুরন্ত প্রশংসা বাংলার প্রত্যন্ত গ্রামের এই যুবকের এক অভাবনীয় দক্ষতার

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : সুন্দরবনের গর্ব মহেশ হালদার। এখন তাঁর কাহিনী এতল্লাটের লোকজনের মুখে-মুখে ঘুরছে। নিজের অকল্পনীয় দক্ষতার স্বীকৃতির স্বরূপ ইতিমধ্যেই বহু পুরস্কার ঝুলিতে ভরেছেন এই বঙ্গসন্তান। কীর্তির শিখর ছুঁয়েও পা মাটিতেই বছর তেত্রিশের এই যুবকের। এবার গ্রামের ছোট ছোট ছেলেমেয়েদেরও দুরন্ত পারদর্শী করে তুলতে মনোনিবেশ করেছেন মহেশ।

সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকা পাথরপ্রতিমার ঢোলাহাটের ভাজনা মানিক দুয়ানী এলাকা। এখানকারই বছর তেত্রিশের যুবক মহেশ হালদার এখন এলাকার মানুষের নয়নের মণি। তাকলাগানো কাঠের মূর্তি তৈরি করে দেশ-বিদেশেও সুনাম কুড়িয়েছেন এই যুবক।

ছোটবেলা থেকেই ছবি আঁকার দিকে বিশেষ আগ্রহ ছিল মহেশের। মধ্যবিত্ত পরিবারের স্কুল শিক্ষক নিমাই চাঁদ হালদারের ছোট ছেলে মহেশ লেখাপড়ার সঙ্গে-সঙ্গে ছবি আঁকা শুরু করেন। এমনকী মহেশের এই ছবি আঁকা নিয়ে তাঁর মা-বাবার মধ্যেও প্রায়শই মতবিরোধ লেগে থাকত। মহেশের বাবা চাইতেন, ছেলে ভালো করে লেখাপড়া শিখুক। তাঁর মা চাইতেন ছবি আঁকার সঙ্গেই চলুক মহেশের লেখাপড়া। যদিও শেষ পর্যন্ত লেখাপড়া বেশি দূর হয়নি মহেশের। তবে ছবি আঁকায় দুরন্ত কীর্তির মাইলস্টোন ছুঁয়েছেন মহেশ। ডিপ্লোমা লাভ করে কলকাতার চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয় থেকে MFA পাশ করেছেন মহেশ।

মহেশের অবিস্মরণীয় কীর্তি মন ছুঁয়ে গিয়েছে এলাকাবাসীরও। কাঠের মূর্তি, বালি দিয়ে ভাস্কর্য তৈরি, চামড়ার উপরে বিভিন্ন ছবি-সহ রং-তুলি নিয়ে বিভিন্ন ধরনের ছবি আঁকায় তাক লাগিয়েছেন এই যুবক। নিজের গ্রামেই মহেশ গড়ে তুলেছেন অভিনব এক শিক্ষাকেন্দ্র। সেখানেই গ্রামের ছেলেমেয়েদের জন্য ঠাকুমার নামে ছবিরাণী অঙ্কন শিক্ষাকেন্দ্র গড়ে তুলেছেন মহেশ। বর্তমানে তাঁর ‘পাঠশালা’য় ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা প্রায় ২০০।

নিজের অবিস্মরণীয় দক্ষতার স্বীকৃতি স্বরূপ ইতিমধ্যেই দেশ-বিদেশ থেকে বহু পুরস্কার পেয়েছেন মহেশ। এমনকী তাঁকে অনেক সংস্থা থেকে লোভনীয় চাকরির (Jobs) প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে বলে তাঁর দাবি। তবে গ্রাম ছেড়ে নড়েননি মহেশ। নিজের দক্ষতা এলাকার ছোট ছোট বাচ্চাদের মধ্যে বিলোতে শুরু করেছেন তিনি। আর সেই কারণেই মহেশ হালদারের জন্য গর্বে বুক চওড়া সুন্দরবনের এতল্লাটের বাসিন্দাদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *