দক্ষিন দিনাজপুর জেলা জুড়ে সম্মিলীত ভাবে পালিত হলো ঐতিহাসিক মে দিবস

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

পল মৈত্র,দক্ষিন দিনাজপুরঃ- মে দিবস উপলক্ষে সারা বিশ্বের পাশাপাশি আজ দক্ষিন দিনাজপুর জেলা জুড়ে বাম ডান ও নকশাল সংগঠনের কর্মী ও সমর্থকেরা মে দিবস পালন করলেন নিষ্ঠার সঙ্গে। এদিন সকালে তৃনমূলের শ্রমিক সংগঠন বিশাল মিছিল করে গঙ্গারামপুর শহর পরিক্রমা করে এর পাশাপাশি সিপিআইএমেরও বিশাল মিছিল গোটা শহর পরিক্রমা করে।

অন্যদিকে, গঙ্গারামপুর থানার নারই এলাকায় বেশ কয়েকটি চালের মিল থাকায় সেখানকার কর্মী ও শ্রমীকদের নিয়ে কাস্তে হাতুরী ও লাল তারার সমন্বয়ে দলীয় পতাকা উত্তলনের মধ্য দিয়ে লাল সেলাম ও শ্রমীক মেহনতি মানুষ জিন্দাবাদ ধ্বনিতে মে দিবস পালন করলেন জেলা সিপিআইএমএল রেড স্টার তথা নকশাল নেতা মানস চক্রবর্তী। উপস্থিত ছিলেন দলের অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ । উপস্থিত মানস চক্রবর্তী মে দিবস সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান বক্তব্য রাখেন। এর পাশাপাশি কুমারগঞ্জ সহ জেলার সদর শহর বালুরঘাটেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি নিষ্ঠার সহিত এই দিনটি পালন করে।

ইতিহাসের পাতা থেকে জানা যায় যে,১লা মে মহান মে দিবস। দিনটি বিশ্বব্যাপী শ্রমজীবী মানুষের আন্দোলন-সংগ্রামে উজ্জীবিত হওয়ার দিন। শ্রমিকদের ওপর শোষণ-বঞ্চনার অবসান ঘটবে, এটি এমন ই এক স্বপ্ন দেখারও দিন ।মাঠেঘাটে, কলকারখানায় খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে রক্তঝরা সংগ্রামের গৌরবময় ইতিহাস সৃষ্টির দিন। সমস্ত শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় পালিত হয়ে আসছে এই দিনটি। বিশ্বব্যাপী শ্রমজীবী মানুষের আন্দোলন-সংগ্রামে অনুপ্রেরণার উৎস এদিন। মালিক-শ্রমিক সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠা আর শ্রমিকদের শোষণ-বঞ্চনার অবসান ঘটার স্বপ্ন দেখারও দিন এটি। দীর্ঘ বঞ্চনা আর শোষণ থেকে মুক্তি পেতে ১৮৮৬ সালের এদিন বুকের রক্ত ঝরিয়েছিলেন শ্রমিকরা। আজকের দিনেই আট ঘন্টা কাজের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের সব শিল্পাঞ্চলে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন শ্রমিকরা। প্রায় তিন লক্ষাধিক শ্রমিক সেদিনের সেই ডাকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ বন্ধ রেখে শিকাগো শহরে হে মার্কেটে বিক্ষোভ সমাবেশে যোগদান করে যা পরিনত হয় এক জনসমুদ্রে । এক লাখ ৮৫ হাজার নির্মাণ শ্রমিকের সঙ্গে আরও অসংখ্য বিক্ষুব্ধ শ্রমিক লাল ঝাণ্ডা হাতে সেখানে সমবেত হন। বিক্ষোভের একপর্যায়ে পুলিশ শ্রমিকদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালালে প্রাণ হারান ১১ শ্রমিক । এর ফলে ঐ বিক্ষোভের আগুন দাবানলের মতন ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র বিশ্বে। গড়ে ওঠে শ্রমিক-জনতার বৃহত্তর ঐক্য। তীব্র আন্দোলনের জেরে যুক্তরাষ্ট্র সরকার অবশেষে শ্রমিকদের দিনে ৮ ঘন্টা কাজের দাবি মেনে নিতি বাধ্য হয়।

১৮৮৯ সালের ১৪ জুলাই প্যারিসে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে শিকাগোর রক্তঝরা শ্রমিক আন্দোলন কে স্বীকৃতি দিয়ে ওই ঘটনার স্মারক হিসেবে ১ মে দিন টিকে ‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৮৯০ সাল থেকে প্রতি বছর দিবসটিকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ‘মে দিবস’ হিসাবে পালন করতে শুরু করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *