ফসল ফলবে মাটি ছাড়াই ,লাগবে এমনকি না জলও! দুই পড়ুয়া তাক লাগালেন এমনি এক আবিষ্কারে
বেস্ট কলকাতা নিউজ : কৃষিকাজের উপরই নির্ভর মূলত আমাদের দেশ। কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত দেশের সিংহভাগ মানুষই। এমনকি কৃষিকাজ থেকেই আসে দেশের বার্ষিক আয়ের একটা বড় অংশই। তবু আজ পর্যন্তপুরনো পন্থার উপরেই নির্ভরশীল আমাদের দেশের কৃষি ব্যবস্থা । আজও এ দেশে দেখতে পাওয়া যায় না কৃষিকাজকে উন্নত করার বা আধুনিক উপায় কাজে লাগানোর তেমন কোনও চেষ্টা। স্মার্ট ফার্মিং নয়, এ দেশের চাষী থেকে সরকার, সকলেই বরং অধিক আগ্রহী চাষাবাদের চিরাচরিত রীতি মেনে চলতেই। তবে সত্যিই যদি অত্যাধুনিক প্রক্রিয়ায় চাষ করা হত পশ্চিমের উন্নত দেশগুলির মতো, তা হলে হয়তো আজও এত দুর্দশায়, দারিদ্র্যে দিন কাটাতে হত না এ দেশের চাষীভাইদের।
তবে আজকাল সময় বদলাচ্ছে ধীরে ধীরে । বদলাচ্ছে এমনকি মানুষের মানসিকতা।চিন্তাধারার বদলও ঘটছে বিজ্ঞানের উজ্জ্বল উপস্থিতিতে। কৃষিকাজেও এমনকি তার ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। আমাদের দেশে চাষের অন্যতম মূল সমস্যা হল সেচ কাজ ।জলের অপ্রতুলতার কারণে উন্নতমানের সেচের প্রয়োজন হয় দেশের অনেক রাজ্যেই , নতুবা নির্ভর করতে হয় বৃষ্টির জলের উপরই । ফলে ফলন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে অনেকটাই। কিন্তু যদি এমন হতো, যে চাষের জন্য প্রয়োজন হত প্রায় ৯৫ শতাংশ কম জলের । মাটি প্রায় লাগত না বললেই চলে । তা হলে কিন্তু সহজেই সমাধান হয়ে যেত অনেক অনিশ্চয়তার। এমনকি গবাদি পশুরাও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জুড়ে রয়েছে চাষের সঙ্গে। কৃষিকাজে অনস্বীকার্য তাদের অবদানও । তাদের সঠিক দেখভাল করা, তাদের খাদ্যের জোগান দেওয়াও কিন্তু অন্যতম দায়িত্বের মধ্যে পড়ে কৃষকভাইদের। তাই দুই পড়ুয়া তাক লাগালেন গবাদি পশুর খাদ্য উত্পাদনে সাড়া ফেলে দেওয়া এক পদ্ধত আবিষ্কার করে।
যেমন দুই পড়ুয়া গবেষক সম্প্রতি বানিয়ে ফেলেছেন মাটি হীন, জল হীন চাষের পদ্ধতি । নয়াদিল্লির TERI School of Advanced Studies-এর এই দুই পড়ুয়ার নাম সৌরদীপ বসাক এবং লভকেশ বালচন্দানী । সম্প্রতি তাঁদের এই আবিষ্কারের জন্য ব্রোঞ্জ পদকও তাঁরা জিতেছেন Grand Final of the Efficiency for Access Design Challenge-এ । তাঁদের আবিষ্কার সৌরশক্তি চালিত হাইড্রোফোনিক ফুডার ইউনিট। যার মাধ্যমে মাটি ছাড়াই তৈরি হতে পারে সবুজ, সতেজ, পুষ্টিসমৃদ্ধ ঘাস।
পিডব্লউসি-তে কাজ করতো সৌরদীপ। তিনি সেই কাজ ছেড়ে দেন। অন্যদিকে, লভকেশ আগে পড়াশোনা করতেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে । স্ট্রিম পরিবর্তন করে তিনি পড়াশোনা করতে শুরু করেন রি-নিউএবল এনার্জি নিয়ে । তাঁর পছন্দের বিষয় ছিল ক্লাইমেট চেঞ্জ ও এগ্রিকালচারাল প্র্যাকটিস।এ ভাবেই তাঁরা বানিয়ে ফেলেন হাইড্রোফোনিক ফুডার ইউনিট। যাতে ৯৫ শতাংশ কম জল লাগে সাধারণ চাষের তুলনায় ।এমনকি প্রয়োজন হয় না মাটির। বীজ থেকে পরিপূর্ণ হতে সময় লাগে মাত্র ৮ দিন । মাসে লাগে ০.৫ ইউনিট বিদ্যুত্।