ফের দুই শিশুর মৃত্যু হল শহরে , কলকাতায় ক্রমশ বাড়ছে অ্যাডিনোভাইরাসের দাপট

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : শহর কলকাতা জুড়ে এখন একটাই আতঙ্ক,যার নাম অ্যাডিনোভাইরাস । এদিকে স্বাস্থ্য দফতরের তরফ থেকে একগুচ্ছ নির্দেশিকাও জারি করা হয়েছে এই ভাইরাস থেকে শিশুদের রক্ষা করার জন্য। এমনকি সচেতন থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অভিভাবকদের ও । কিন্তু তারপরেও আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে শহরের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল গুলিতে। এই মতো পরিস্থিতিতে আবারও দুই শিশুর মৃত্যু হল কলকাতার দুটি আলাদা হাসপাতালে ।

পাওয়া খবর অনুযায়ী, শনিবার রাতে বি সি রায় শিশু হাসপাতালে মৃত্যু হয় নয় মাস বয়সের এক রত্তির। হাওড়ার উদয়নপুরের বাসিন্দা ওই শিশুকে ২ ফেব্রুয়ারি প্রথমবার বি সি রায় শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল বলে জানা যায় পরিবারের তরফ থেকে। কিন্তু পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ শিশুকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ১১ ফেব্রুয়ারি বাড়ি নিয়ে যান তাঁরা। কিন্তু ১৪ ফেব্রুয়ারি আবারও তাকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল জ্বরের জন্য । তবে সেই সময় আউটডোর থেকেই চিকিৎসা করে ওই শিশুকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়, তাকে ভর্তি নেওয়া হয়নি। ১৯ ফেব্রুয়ারি পুনরায় পরিবারের সদস্যরা শিশুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার ফলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। কিন্তু আইসিইউতে (ICU) বেড না থাকার কারণে রাখা যায়নি তাকে। অবশেষে ওই শিশুটি অকালে প্রাণ হারায়।

পরিবারের অভিযোগ, যেখানে বারবার স্বাস্থ্য দফতরের তরফ থেকে অ্যাডিনো ভাইরাস নিয়ে সতর্কতা জারি করা হচ্ছে, সেখানে ওই শিশুটিকে বারবার হাসপাতালে আনা সত্ত্বেও কোনো পরীক্ষা করা হয়নি অ্যাডিনো ভাইরাস সংক্রান্ত। তাঁর চিকিৎসাও করা হয়নি। পরবর্তীতে জানা যায়, শুধু অ্যাডিনো ভাইরাস নয়, হাসপাতালের গাফিলতি এবং ভুল চিকিৎসা রয়েছে ওই শিশু মৃত্যুর নেপথ্যে । অন্যদিকে অ্যাডিনো ভাইরাসের কারণে রবিবার ভোরে আরও এক দেড় বছরের শিশুর মৃত্যু হয়। তাঁর চিকিৎসা চলছিল কলকাতা মেডিকেল কলেজের মাদার অ্যান্ড চাইল্ডে। প্রায় চার দিন আগে ওই শিশুকে কলকাতা মেডিকেলে স্থানান্তরিত করা হয় কল্যাণী মেডিকেল কলেজ থেকে। শহরে শিশু মৃত্যুর হার এইভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

স্বাস্থ্য ভবনের নয়া নির্দেশিকা:

১. রাজ্যের প্রত্যেকটি হাসপাতালে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের ব্যবস্থা অবশ্যই রাখতে হবে।
২. ভেন্টিলেটর প্রস্তুত রাখতে হবে , যাতে শিশুদের কোন সমস্যা না হয়।
৩. অবশ্যই পর্যাপ্ত বেড রাখতে হবে এবং হাসপাতালে শিশু বিভাগ না থাকলে তা তৈরি করতে হবে।
৪. খাওয়া-দাওয়ার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে । পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে । শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
৫. যদি শিশু জ্বর সর্দিতে আক্রান্ত হয়, তাহলে তাদেরকে স্কুলে কিংবা বাইরে না পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
৬. টানা যদি তিন থেকে পাঁচ দিন জ্বর থাকে অথবা রক্ত অক্সিজেনের মাত্রা ৯২% থেকে নিচে নেমে যায় তাহলে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে শিশুকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *