বাবা-মা’বাড়িয়ে বলেছিলেন ‘POCSO আইনে মামলা করতেই, হেনস্থা সংক্রান্ত একটি মামলায় অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস কলকাতা হাইকোর্টের

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : পকসো আইনে মামলা দায়ের করার জন্যই অভিযোগ অতিরঞ্জিত করেছেন খোদ বাবা-মা। হেনস্থা সংক্রান্ত একটি মামলায় এমনই মন্তব্য আদালতের। অভিযুক্ত যুবককে বেকসুর খালাস করল হাইকোর্ট। মামলা চলাকালীন বিচারপতির পর্যবেক্ষণ যে, কিশোরীর বয়ান ও তার বাবা-মায়ের বয়ানের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। মামলা চলাকালীন আরও দেখা গিয়েছে যে, ঘটনার পরে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য কিশোরী ও তার পরিবার সম্মতিও দেয়নি। সেই মামলায় অভিযুক্তকে অব্যাহতি দিলেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।

২০১৬ সালে হুগলির এক নাবালিকাকে টিউশন থেকে ফেরার সময় সাইকেল থেকে নামিয়ে শ্লীলতাহানি ও যৌন হেনস্তা করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগে মামলা দায়ের হয়। ২০২২ সালে নিম্ন আদালত অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে। তিন বছরের জেল ও ৫০০০ টাকা আর্থিক জরিমানার নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অভিযুক্ত যুবক।

বিচারপতি বলেন, পকসো আইন সংক্রান্ত যে কোনও মামলায় নির্যাতিতার বয়ান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুনানির পর কোনও যৌন অভিপ্রায়ের স্পর্শ করা হয়েছে এমন কোনও তথ্য পাননি বিচারপতি। পকসো আইনের ১১ নম্বর সেকশনে যৌন অভিপ্রায় নিয়ে স্পর্শ করার অভিযোগ জানানো যায়। এ ক্ষেত্রে তেমনটা হয়নি বলেই মনে করেন বিচারপতি। ২০১৬ সালে ১৩ বছরের মেয়েকে যৌন হেনস্থার অভিযোগে মামলা করেছিলেন তাঁর বাবা। ওই ব্যক্তির অভিযোগ ছিল, মেয়ে যখন সাইকেলে চেপে বাড়ি ফিরছিল, সেই সময় অভিযুক্ত সামনে এসে দাঁড়ায় ও খারাপ উদ্দেশে কিশোরীর মুখ চেপে ধরার চেষ্টা করে। একাধিক ধারায় মামলা হয় সেই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে।

নির্যাতিতা তার বয়ানে জানিয়েছিল, অভিযুক্তের নাম তার মনে নেই। সে জানিয়েছিল, সাইকেল নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় সে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিল ওই যুবককে। এরপর ওই যুবক তাকে সাইকেল থেকে ধাক্কা মারে, পরে মুখ ও গলা চেপে ধরার চেষ্টা করে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, অভিযুক্ত ওই কিশোরীর গোপন অঙ্গ স্পর্শ করার চেষ্টা করেছিলেন, এমন কোনও অভিযোগ নেই অথবা পোশাক খোলার চেষ্টাও হয়নি।

পরে নির্যাতিতার বাবা তাঁর বয়ানে জানান, তাঁর মেয়েকে সাইকেল থেকে ঠেলে ফেলে দেয় অভিযুক্ত যুবক। তিনি জানান, মেয়ে টিউশন পড়ে সাইকেলে ফিরছিল। সেই সময় অভিযুক্ত তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। তার মুখ চেপে ধরে তার গোপনাঙ্গে হাত দেয়। মায়ের বয়ান ছিল, তার মেয়েকে সাইকেল থেকে ফেলে দেওয়ার পর তাকে টেনে রাস্তার পাশে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর তার পোশাক টেনে গোপনাঙ্গে হাত দেয় অভিযুক্ত। এদিকে বিচারপতি তাঁর পর্যবেক্ষণে
এও উল্লেখ করেন, কিশোরীর বাবা ও মায়ের বয়ানে অতিরঞ্জন করা হয়েছে, যাতে পকসো আইনে মামলা হয়। অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করেছে আদালত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *