ভারতের নতুন বন্দর হতে চলেছে আন্দামানে! কোটি কোটি টাকা বাঁচানোই কি একমাত্র উদ্দেশ্য? নাকি অন্য খেলা হবে মহাসাগরে, উঠছে প্রশ্ন

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : ভারতের নতুন বন্দর হতে চলেছে আন্দামানে নিকোবরে। বাণিজ্যে এবার মালামাল হবে ভারত। মুম্বই বন্দর থাকতেও মূলত এতদিন ভারত কোনো কন্টেনার ট্রান্সশিপমেন্ট করতে পারত না । তবে বিতর্ক ক্রমশ বাড়ছে এই বন্দর তৈরির আগেই , প্রজেক্ট আটকাবে না তো? ভারত মহাসাগরে এ নতুন দাবার কোন চাল দিল ভারত? একটা কাজের জন্য এতদিন ভারতকে নির্ভর করে থাকতে হত শ্রীলঙ্কা আর মালেশিয়ার ওপর। এবার মুশকিল আসান করবে আন্দমান নিকোবরেই বন্দরই। নয়া দিল্লির আসল উদ্দেশ্যটা জেনে নিন ৪১ হাজার কোটির টাকার মেগা প্রজেক্টের নেপথ্যে।

মূলত পর্যটন কেন্দ্র আন্দামান নিকোবর। এখানে একটা বন্দর হওয়া মানে কি আরও বেশি বাণিজ্যে সুবিধা নাকি কারণটা অন্য? তথ্য বলছে, বন্দর গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে নিকোবর দ্বীপের দক্ষিণ প্রান্তে গ্যালাথিয়ান খাঁড়ির কাছে । এর নেপথ্য প্রথম ও সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টাই হল উপযুক্ত কন্টেনার ট্রান্সশিপমেন্ট ফেসিলিটি নেই ভারতে। মুম্বই পোর্ট থাকা সত্ত্বেও ভারত বড় বড় জাহাজগুলোকে হ্যান্ডেল করতে পারতো না। তাই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পণ্য পাঠাতে বা নামাতে এতদিন কলম্বো, সিঙ্গাপুরের মতো বিদেশি বন্দর ব্যবহার করতে হত। এর মানে প্রচুর টাকা খরচ৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই বন্দর যদি একবার তৈরি হয়ে যায় প্রতিবছর ভারত ২০০-২২০ মিলিয়ন ডলার বাঁচাতে পারবে। তবে শুধুমাত্র খরচ বাঁচানোই নয়। ভারতের কাছে বিকল্প থাকছে বহির্বাণিজ্যে নিজেদের সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করতে দিয়ে অর্থনৈতিক ও অন্যান্য সুবিধা আদায় করারও।

কিন্তু বন্দর তৈরি করব বললেই তো আর করা যায়? এই পোর্ট ঘিরে রয়েছে বেশ কিছু বিতর্কও। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ভারতের এতদিন কোনও বন্দর ছিল না ইস্ট-ওয়েস্ট শিপিং করিডরে । তবে এবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে অবস্থানগতভাবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যপথের মাত্র ৪০ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে থাকা এই দ্বীপপুঞ্জের প্রস্তাবিত সমুদ্রবন্দর । সেখান থেকে ছোট জাহাজের পণ্য সব চেয়ে বড় আকারের কেপসাইজ ভেসেলে বোঝাই করে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে যাওয়ার সুবিধা তো মিলবেই। সেই সঙ্গে পাওয়া যাবে বাইরে থেকে আসা পণ্যও ,যা ওই বন্দরেই খালাস করে ছোট জাহাজে তা বোঝাই করার সুবিধাও মিলবে।

কিন্তু ঠিক যেখানে এই পোর্ট তৈরির কথা চলছে ৯ লক্ষ ৬৪ হাজার গাছ কাটতে হবে সেই এলাকায় জঙ্গল এর মধ্যে। যার ফলে এটা পড়ছে একটা বিতর্কিত প্রজেক্টের মধ্যে। এছাড়াও এই প্রজেক্টের মধ্যেই পড়ছে গালাথিয়া বে ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুরিও যেখানে পাওয়া যায় লেদারব্যাক কচ্ছপ । সেক্ষেত্রে একটা ঝুঁকির থাকছেই পরিবেশে ভারসাম্য রক্ষা৷ প্রথমত ভারত মহাসাগরে নতুন প্রভাব বিস্তার, দ্বিতীয়ত আন্তর্জাতিক বাণিজ্যক্ষেত্রে থেকে প্রচুর লাভ ৷ কিভাবে বিতর্ক কাটিয়ে এই বন্দরের স্বপ্নকে ভারত বাস্তবায়িত করে এখন সেটাই দেখার৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *