‘মহারাজা’আর কোনো দিন বর্ধমান মুখো হননি ভোটে হেরে গিয়ে , আজও আলোচনার বৃত্তে দেশ স্বাধীনতার পরপরই সেই ঘটনা!

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : কৃষ্ণনগর রাজপরিবারের সদস্য অমৃতা রায় লোকসভা নির্বাচনে BJP-র প্রার্থী হয়েছেন। নানা কারণে তাঁকে নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত। এরই মধ্যে বর্ধমান দুর্গাপুরের BJP প্রার্থী দিলীপ ঘোষ মহারাজা উদয়চাঁদ মহতাবের প্রতিকৃতি ভেবে বনবিহারী কাপুরের গলায় মালা পরিয়ে ধ্বনি দিয়েছেন। এক সময় বর্ধমানের শেষ মহারাজা উদয়চাঁদ মহতাব রাজনৈতিক লড়াইয়ে নেমেছিলেন। ভোটের সেই প্রেস্টিজ ফাইটে তিনি হেরে গিয়েছিলেন CPI প্রার্থী বিনয় চৌধুরীর কাছে। ১৯৫২-র প্রথম বিধানসভা নির্বাচনে বর্ধমান কেন্দ্র থেকে জাতীয় কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন মহারাজা। তার ১০ বছর পরে রাজ পরিবারের হারানো সম্মান ফিরিয়ে এনেছিলেন রাণী রাধারাণী মহতাব।

তখনও বর্ধমান দক্ষিণ ও বর্ধমান উত্তর কেন্দ্র ভাগ হয়নি। শুধু বর্ধমান বিধানসভা কেন্দ্র ছিল। দেশ স্বাধীন হয়েছে মাত্র কয়েকটা বছর আগে। দেশের স্বাধীন রাজাদের রাজ্যপাট সবে ইতিহাস হয়েছে। কিন্তু রাজগরিমা তখনও ছিল বিদ্যমান। তখনও রাজবাড়িতেই বর্ধমানের মহারাজা থাকতেন। ১৯৫২-এ বর্ধমান বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছিলেন মহারাজা উদয়চাঁদ মহতাব । তাঁর বিপরীতে ছিলেন কমিউনিষ্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার অর্থাৎ সিপিআই প্রার্থী বিনয়কৃষ্ণ চৌধুরী ।

সেই লড়াইয়ে পরাজিত হয়েছিলেন বর্ধমানের মহারাজা। মন খারাপ হয়েছিল মহারাজার। অভিমানে পরবর্তী সময়ে আর বর্ধমানে থাকেননি তিনি। তবে ১৯৬২ সালে বিধানসভা নির্বাচনে রাজপরিবারের সম্মান পুনরুদ্ধার করতে লড়াইয়ের ময়দানে নেমেছিলেন ‘রাণী মা’ রাধারানী মহতাব। মহারানী শহরবাসীর বাড়ি-বাড়ি গিয়ে ভোট চেয়েছিলেন। সেই বিনয় চোধুরীকে পরাজিত করেছিলেন তিনিই। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলেন বর্ধমানের রাজ পরিবারের সদস্যরা।

দীর্ঘ দিন ধরে বর্ধমানের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করছেন অধ্যাপক সর্বজিৎ যশ। তিনি বলেন, “১৯৫২ সালে হেরে যাওয়ার পর ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত বর্ধমানে ছিলেন মহারাজা উদয়চাঁদ মহতাব। তারপর তিনি বেনারস চলে গিয়েছিলেন। মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল তাঁর। রাজা আর বর্ধমানে ফেরেননি। বর্ধমানের ওপর দিয়ে যখন ট্রেনে চড়ে বেনারস যেতেন তখন চোখ বন্ধ করে চুপচাপ বসে থাকতেন। ওনার ছেলে প্রণয়চাঁদ মহতাব একথা বলেছিলেন। যখন মহারাজা হেরেছিলেন তখনও রাজবাড়িতে থাকতেন। জমিদারি প্রথা সবে গিয়েছে। রাজত্ব হারানোর কয়েক মাসের মধ্যে ভোট হয়েছে। জিতলে হয়তো থেকে যেতেন। কিন্তু হেরে গিয়ে কষ্ট পেয়েছিলেন।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *