মৌখিকভাবে বস্ত্রহরণ’ করা হয়েছে এথিক্স কমিটিতে , মহুয়া মৈত্রের নালিশ ওম বিড়লাকে

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : অন্যান্য বিরোধী সাংসদদের সঙ্গে লোকসভার এথিক্স কমিটির শুনানি থেকে বেরিয়ে আসার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই কমিটির চেয়ারপার্সন তথা বিজেপি সাংসদ বিনোদ কুমার সোনকারের কড়া নিন্দা করে লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লাকে চিঠি দিলেন মহুয়া মৈত্র। চিঠিতে তিনি অভিযোগ করেছেন, প্যানেলের সকল সদস্যদের উপস্থিতিতে বিনোদ সোনকারের তাঁর ‘মৌখিকভাবে বস্ত্রহরণ’ করেছেন। মহুয়ার আরও অভিযোগ, সভায় তাঁকে ‘অনৈতিক, নোংরা এবং পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের’ সম্মুখীন হতে হয়েছে। এদিন, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন করার অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এথিক্স কমিটির সভায় হাজিরা দেন মহুয়া। কিন্তু, সভার মাঝেই রণংদেহী মূর্তিতে বেরিয়ে আসেন তিনি। তাঁর সঙ্গে সভা ত্যাগ করেন, কমিটির সদস্য হিসেবে থাকা বিরোধী সাংসদরাও।

ওম বিড়লাকে লেখা ঠিঠিটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে পোস্ট করেছেন তৃণমূল সাংসদ। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, এই এথিক্স কমিটির অন্য কোনও নাম দেওয়া উচিত। কারণ, এই কমিটির নীতি-নৈতিকতা বলে কিছু অবশিষ্ট নেই। প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করার পরিবর্তে, তাকে বিদ্বেষপূর্ণ এবং মানহানিকর প্রশ্ন করে এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান তাঁর পক্ষপাতিত্ব দেখিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন মহুয়া মৈত্র। তিনি লিখেছেন, “প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার পরিবর্তে, বিদ্বেষপূর্ণ এবং স্পষ্টতই মানহানিকর প্রশ্ন করে চেয়ারম্যান এতটাই পক্ষপাতিত্ব দেখিয়েছেন যে, উপস্থিত ১১ সদস্যের মধ্যে ৫ জনই তাঁর লজ্জাজনক আচরণের প্রতিবাদে সভার কার্যক্রম বর্জন করেছেন।”

এই ‘ব্যক্তিগত অবমাননা এবং বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ’-এর হাত থেকে সুরক্ষার অনুরোধ জানিয়ে লোকসভার অধ্যক্ষকে মহুয়া লিখেছেন, “স্যার, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এই সরকার দাবি করে যে মহিলাদের সম্মান এবং মর্যাদা সমুন্নত রাখার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করা হচ্ছে। তাহলেই ভাবুন, লোকসভার মাত্র ৭৮ জন মহিলা সদস্যের একজন হিসাবে এথিক্স কমিটির শুনানির নামে কমিটির চেয়ারপার্সনের দ্বারা ‘বস্ত্রহরণ’-এর শিকার হওয়াটা কতটা লজ্জাজনক।”

চিঠিতে মহুয়া মৈত্র আরও বলেছেন, “সুপ্রিম কোর্টের মতে গোপনীয়তা একটি মৌলিক অধিকার। একজন মহিলা সাংসদকে অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করে অপমান করা, যার মধ্যে আমি রাতে কার সঙ্গে কথা বলি, কতবার কথা বলি এবং সেইসব কলের বিবরণ চাওয়া হয়েছে – এটি অত্যন্ত নীচু মানসিকতার পরিচয়ের পাশাপাশি, আমার গোপনীয়তার মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন।”

মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী দর্শন হিরানন্দানির সঙ্গে তাঁর সংসদীয় ইমেইল আইডি এবং পাসওয়ার্ড ভাগ করে নেওয়ার অভিযোগ আছে। চিঠিতে এই অভিযোগ খন্ডন করে মহুয়া জানিয়েছেন, তিনি শুধুমাত্র তাঁর প্রশ্নগুলি টাইপ করার জন্য হিরানন্দানির কার্যালয়ের সহায়তা নিয়েছিলেন। সেই কারণেই লোকসভা সচিবালয়ের পোর্টালের লগইন আইডি এবং পাসওয়ার্ড তিনি ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছিলেন। তাছাড়া, ওটিপি বা ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড ছাড়া সেখানে কোনও প্রশ্নই জমা দেওয়া সম্ভব নয়। কাজেই, তাঁর অনুমতি ছাড়া কেউ কোনও প্রশ্ন জমা দেননি। লোকসভার সচিবালয়ের পোর্টালের আইডিটি এবং পাসলওয়ার্ড অন্য কোনও ব্যক্তির সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার নিয়মগুলি কেন সাংসদদের জানানো হয়নি, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তৃণমূল সাংসদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *