সিবিআই হুগলি ও পূর্ব মেদিনীপুরে তল্লাশি চালাল বালাসোর ট্রেন দুর্ঘটনার তদন্তে নেমে

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : ওড়িশার বালাসোরে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার তদন্তে এবার গোয়েন্দাদের ‘আতস কাচের’ নীচে বাংলার দুই জেলা। করমণ্ডল দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে এবং অভিযুক্ত রেলকর্মীর সন্ধানে এবার পশ্চিমবঙ্গের দুই জেলায় তল্লাশি অভিযান চালাল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা, CBI। সোমবার হুগলি ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় অভিযান চালিয়েছেন গোয়েন্দারা। মূলত, দুর্ঘটনাস্থলের সিগন্যাল ও রিলে রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত আমির খানের খোঁজেই হুগলি ও পূর্ব মেদিনীপুরের একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালাল সিবিআই।

সিবিআই সূত্রে খবর, আমির খান হুগলি জেলার ডানকুনি এলাকার বাসিন্দা। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়্গপুর ডিভিশনের সিগন্যাল ডিপার্টমেন্টের জুনিয়ার ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে চাকরিতে যোগদান করেন তিনি। বর্তমানে তাঁর পোস্টিং ছিল ওড়িশার বাহানাগা বাজারে। সেই সূত্রে বাহানাগা বাজারের সোরহা থানা এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন আমির। তাই সোমবার সকাল থেকে সোরহা এলাকা, বাহানাগা বাজার সহ ওড়িশার বিস্তীর্ণ এলাকার পাশাপাশি হুগলি ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতেও তল্লাশি অভিযান চালাল সিবিআই। ডানকুনি সহ হুগলির বিভিন্ন এলাকা এবং খড়্গপুর সহ পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন জায়গায় সিবিআইয়ের একটি দল তল্লাশি অভিযান চালায়।

যদিও বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়েও আমিরের কোনও হদিশ মেলেনি। তবে সোরহা এলাকায় আমিরের বাড়িটি সিল করে দিয়েছেন গোয়েন্দারা। আমিরের হদিশ না মিললেও তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে রেল সম্পর্কিত বেশ কিছু ডিজিটাল নথি পেয়েছেন তদন্তকারীরা। যদিও নথিগুলিতে কী রয়েছে, সেগুলির সঙ্গে করমণ্ডসল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার কোনও যোগ রয়েছে কিনা সে ব্যাপারে এখনই কিছু বলতে নারাজ তাঁরা।

অন্যদিকে, আমির খানের নিখোঁজ হওয়ার তত্ত্ব উড়িয়ে দিয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক বিবৃতি দিয়ে বলেন, “রেলের এক কর্মী নিখোঁজ বা অপহরণ হয়েছেন বলে কিছু সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু, কেউ নিখোঁজ বা অপহরণ হননি। রেলের সকল কর্মী সিবিআই ও রেলের সুরক্ষা কমিটির তদন্তে সহায়তা করছেন।”

প্রসঙ্গত, গত ২ জুন বাহানাগা বাজারে একসঙ্গে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মালগাড়ি সহ ৩টি ট্রেন। যার মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় একেবারে বেলাইন হয়ে পড়া চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস। ট্রেনটি হঠাৎ করেই লুপ লাইনে ঢুকে পড়ে এবং মালগাড়ির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে ইঞ্জিন ও ৩টি বগি বাদে গোটা ট্রেন। খেলনা গাড়ির মতো দুমড়ে-মুচড়ে আশপাশের লাইনে ছিটকে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস।

ভয়াবহ এই ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় প্রায় ৩০০ যাত্রীর। গুরুতর আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৭০০-র বেশি। তারপর এই দুর্ঘটনার কারণ খুঁজতে গিয়ে প্রকাশ্যে আসে সিগন্যালিং ব্যবস্থার গণ্ডগোল। এই দুর্ঘটনায় কেউ দায়ী থাকলে তার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে বার্তা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভয়াবহতার দিকে লক্ষ্য রেখে দুর্ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেয় রেল। অবশেষে এই দুর্ঘটনায় নাম জড়ায় আমির খানের। হুগলি জেলার বাসিন্দা আমির খান-ই বাহানাগা বাজারে সিগন্যালিং ব্যবস্থার দায়িত্বে ছিলেন। দুর্ঘটনার পর থেকেই তিনি পলাতক। ফলে সন্দেহ আরও জোরাল হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *