অনেকেই চুল দান করেন তিরুপতি মন্দিরে, কী করা হয় সেই চুল দিয়ে জানেন কি ?

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : প্রতি বছর জমা পড়ে কয়েকশো টন চুল!মন্দিরে জমা এত চুল দিয়ে আসলে কী হয়?কোথায় যায়? আপনার মাথার চুল দিয়ে তিরুপতি মন্দিরে ,কী হয় নিজের চোখেই দেখুন। শুধু মহিলারাই নয়। পুরুষরাও তিরুপতির মন্দিরে চুল দান করেন। এই চুল বিক্রি করেই বছরে কত টাকার ব্যবসা করছে মন্দির কর্তৃপক্ষ! জানেন? কারা কেনে এই চুল? কী ভাবে চলে বেচাকেনা?

দেশে তিরুপতি মন্দিরে ভক্তরা সব থেকে বেশি চুল দান করেন।ইচ্ছাপূরণ হলে মন্দিরে গিয়েই চুল কাটিয়ে দান করেন অনেকেই।বছরে ৫০০ থেকে ৬০০ টন চুল জমা হয় মন্দিরে।প্রতিদিন মন্দিরে যে পরিমাণে জমা হচ্ছে, সেই রাশি রাশি চুল কোথায় যায়? ইণ্ডিয়া টিভির প্রতিবেদন বলছে,তিরুপতি মন্দিরে ভক্তদের চুল কামানোর জন্য ৬০০ জন কাজ করেন।লাইন দিয়ে বসিয়ে মাথা কামানো হয়।সেই চুল দিয়ে কী করা হয়?সে খবর কি রেখেছেন?

এই চুল বিক্রি করেই বছরে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করেন মন্দির কর্তৃপক্ষ।আপনার মাথার চুল দিয়ে কীভাবে কোটি কোটি টাকা রোজগার( হচ্ছে? কারা কেনেন এই চুল? তিরুপতি মন্দিরের এই চুল দিয়েও তৈরি হয় দামী পরচুলা ,মন্দিরের কোথায় হয় এই কাজ?কারা বানান এই উইগ ? কোথায় যায়?কেটে ফেলা মাথার সব চুল জমা হয় মন্দিরের এক জায়গায়।টন টন চুল থেকে পরচুলা বানানো মোটেই সহজ নয়। কেটে ফেলা চুল প্রথমে গরম জলে ফোটানো হয়।তার পর তা সাবান দিয়ে ধুয়ে শুকানো হয়। এর পর একটি গুদামে ভরে রাখা হয়।সেই গুদামের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকে ।এই চুল বিক্রি করেই প্রায় ১০০০ কোটি টাকা বছরে রোজগার মন্দির কর্তৃপক্ষের।

বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে চুল সংরক্ষণ করা হয়।রাশি রাশি চুল থেকে বাছাই করাও কঠিন কাজ। প্রথম ভাগে পড়ে ২৭ ইঞ্চির বেশি দৈর্ঘ্যের চুল।দ্বিতীয় ভাগে রয়েছে ১৯ থেকে ২৬ ইঞ্চি দীর্ঘ চুল।আর সবশেষে পাঁচ ইঞ্চির কম দৈর্ঘ্যের চুল রাখা হয় পঞ্চম ভাগে। আপনার মাথার চুল কেজি প্রতি কত টাকায় বিক্রি হয় জানেন?প্রথম ভাগের চুল প্রতি কেজিতে প্রায় ২,৯০০ থেকে ৩০০০ টাকায় বিক্রি হয়।আর পঞ্চম ভাগের চুল বিক্রি হয় কেজি প্রতি ৩৬ টাকা দরে। বিক্রি হয় চিন, আমেরিকা-সহ ইউরোপ, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে।

মন্দিরে এসে মাথা কামান কেনো ভক্তরা? এরপিছনে একটি পৌরাণিক কারণ লুকিয়ে আছে।প্রাচীনকালে ভগবান বালাজির মূর্তির ওপর পিঁপড়ের পাহাড় তৈরি হয়েছিল।প্রতিদিন একটি গরু ওই পাহাড়ে আসত দুধ দিয়ে চলে যেত এতে গরুর মালিক রেগে গরুটিকে মেরে ফেলেন বালাজির মাথায়ও আঘাত লাগে।সেই সঙ্গে মাথার চুলও পড়ে যায় ।তারপর তার মা নীলা দেবী তাঁর চুল কেটে বালাজীর মাথায় রাখেন । প্রসন্ন হয়ে ভগবান নারায়ণ বলেন যে ‘‌চুল শরীরকে সৌন্দর্য দেয়, এইজন্য আজ থেকে যাঁরাই আমার জন্য চুল ত্যাগ করবেন।তাঁর সব মনের ইচ্ছা পূরণ হয়ে যাবে’‌

কথিত আছে যে তিরুপতি বালাজিতে ভক্ত যতটা চুল দান করেন ভগবান তার ১০ গুণ ধনসম্পত্তি তাঁকে ফিরিয়ে দেন। এখানে যাঁরা চুল দান করেন তাঁদের ওপর মা লক্ষ্মীর বিশেষ আর্শিবাদ থাকে। এই বিশ্বাসের জন্যই মন্দিরে চুল দান দীর্ঘ বছর ধরে হয়ে আসছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *