আলুর লাগামছাড়া দামে দিশেহারা মধ্যবিত্ত , কঠোর সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : এমনিতেই মধ্যবিত্তের পকেটে টান করোনা আবহের জেরে। জীবনের ছন্দকে পুরো থামিয়ে দেওয়ার পর আবারও এদিকে জনজীবনও সচল হচ্ছে ক্রমশ। সেখানে দাঁড়িয়ে কারও চাকরি নেই তো কারও কমেছে মাসিক আয়ের পরিমান। দুবেলা দুমুঠো খেয়ে প্রতিনিয়ত সকলেই চলেছে জীবনযুদ্ধে লড়াই করে। আর সেখানেও সকলকে একরকম হিমশিম খেতে হচ্ছে দুবেলা দুমুঠো খাওয়ার যোগাড় করতেও। তার মধ্যেই এবার সাধারণ মানুষের কপালে ভাঁজ ফেলছে বাজারের উত্তাপ।

শীতের মরশুমে হরেক রকমের সবজি পাওয়া গেলেও একরকম আকাশছোঁয়া দাম সবরকমের সবজিরই। এমনকি আলু পেঁয়াজে যেখানে ভরসা ছিল মধ্যবিত্তের হাত দিতে গেলে ছ্যাঁকা লাগছে সেখানেও। কিছু না হলেও আলু-সেদ্ধ ভাতে ফুটিয়ে খাব, এই ভাবনাতেও চিন্তার ভাঁজ পড়ছে মধ্যবিত্তের কপালে। লাগাতার কয়েকদিন ধরে পেঁয়াজের দাম বেড়ে কেজি প্রতি ৭০-৮০ টাকায় গিয়ে থামলেও, এখনও ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী আলুর দাম।খুচরো বাজার সূত্রে খবর, ৩৫ থেকে ৪৫-এর কোটায় ঘোরাফেরা করছে বিভিন্ন ধরণের আলুর দাম। এরকম অবস্থায় এবার, আলুর লাগামছাড়া মূল্য নিয়ে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করল রাজ্য সরকার।

সূত্রের খবর, আলুর দাম নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনতে রাজ্য সরকার এই মর্মে নির্দেশিকা জারি করেছে যে চলতি মাসের ৩০শে নভেম্বরের মধ্যে রাজ্যের সব হিমঘর থেকে আলু বার করে দিতে হবে। সূত্রের আরও খবর, এখনও অন্তত ৭ লক্ষ টন আলু মজুত রয়েছে রাজ্যের হিমঘরগুলিতে। তাই, এই কড়া পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।

এই বিষয়ে রাজ্যের কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার বলেন, “বার বার অনুরোধের পরেও ক্রেতাদের কথা একবারও ভাবলেন না ব্যবসায়ীরা। আলু দাম বাড়ানো হচ্ছে অকারণে মজুত রেখেই। তাই রাজ্যসরকার আর কোনরকম অপেক্ষায় রাজি নয়। ৩০শে নভেম্বরের মধ্যেই খালি করতে হবে রাজ্যের সব হিমঘর।” নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে এই মর্মে। পাশাপাশি, যে শোনা হবে না হিমঘর মালিকদের কোনও অনুরোধই, তাও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে এই নির্দেশিকায়।পাশাপাশি, এ বার মজুতদারেরা সুযোগ পেয়ে গেলেন কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের জোরেই। এরপর সব আলু কিনে নেবে বড় বড় সংস্থা। কেউ সাধারণ ক্রেতাদের কথা ভাবেন না , বলেও মন্তব্য করেন রাজ্যের কৃষি উপদেষ্টা।

আরও জানা গিয়েছে, প্রতি মাসে ৫ লক্ষ টন আলু লাগে এ রাজ্যে । এছাড়া, অন্যান্য রাজ্যে যায় ১ লক্ষ টন আলু। সেই হিসেব অনুযায়ী, রাজ্যের ৪৬২টি হিমঘরে এখনও যে পরিমাণ আলু মজুত রয়েছে তাতে আলুর মূল্য এতটা চড়ার কথা নয় বলেই মনে করছেন চাষিদের একাংশ। চাষীদের এও দাবি, কোনো সমতা থাকছে না জোগানের সঙ্গে চাহিদার আর তাই লাগাম ছাড়া ভাবেই বাড়ছে আলুর দাম। আর তাই আগে রাজ্য সরকারের তরফে আলুর দাম বেঁধে দেওয়া হলেও কাজ না হওয়ায় এবার মধ্যবিত্তের কপালের ভাঁজ মুছতে রাজ্য সরকার চলতি মাসের মধ্যেই হিমঘর খালি করার নির্দেশ দিয়েছে।যা কার্যকর হলে হয়তো আলুর দাম কিছুটা হলেও হ্রাস পাবে বলে সকলে মনে করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *