চিন ভুলে যাবে সমুদ্রে চরবৃত্তি, অবশেষে কলকাতা ‘অস্ত্র’ দিচ্ছে ভারতীয় নৌসেনাকে

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : গত কয়েক মাসে, একাধিকবার ভারত মহাসাগরে গবেষণা জাহাজ পাঠিয়ে ভারতের সামরিক ক্ষমতা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেছে চিন। কখনও শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দরে পাঠানো হয়েছে এই জাহাজ। ভারতের পরামর্শে শ্রীলঙ্কা তাতে রাজি না হওয়ায়, এখন তারা মলদ্বীপের শরণাপন্ন হয়েছে। চলতি মাসেই মালেতে পৌঁছচ্ছে তাদের গবেষণা জাহাজ। গবেষণার নামে, আসলে ভারত মহাসাগরে প্রভাব বাড়াতে চাইছে বেজিং, এমনটাই মত কূটনৈতিক ও সামরিক বিশ্লেষকদের। ভারত মহাসাগরে চিনা গবেষণা জাহাজের এই গুপ্তচরবৃত্তি নিয়ে, বেশ কয়েকবার আপত্তি জানিয়েছে ভারত। এবার আর মুখে নয়, কাজে চিনকে জবাব দেওয়ার পথে হাঁটল ভারতীয় নৌবাহিনী। এবার নৌসেনার দাপটে, ভারত মহাসাগরে চরবৃত্তি করা ভুলে যাবে লাল ফৌজ। ড্রাগনকে জলে উপযুক্ত জবাব দিতে চলেছে ভারত।

শনিবারই (৩ ফেব্রুয়ারি), বিশাখাপত্তনমের নাভাল ডকইয়ার্ড থেকে প্রথম সমুদ্র শুরু করতে চলেছে ‘আইএনএস সন্ধায়ক’। সন্ধায়ক, অর্থাৎ, যে সন্ধান করে। এই জাহাজটি আসলে কোনও রণতরী নয়, ভারতীয় নৌবাহিনীর এক গবেষণা জাহাজ। আধুনিক সক্ষমতায় সজ্জিত এই গবেষণা জাহাজটির সমুদ্র যাত্রার সূচনা করবেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। এছাড়া উপস্থিত থাকবেন নৌবাহিনীর প্রধান, অ্যাডমিরাল আর হরি কুমার, নাভাল ইস্টার্ন কমান্ডের কমান্ডিং অফিসার, চিফ ভাইস অ্যাডমিরাল রাজেশ পেনধারকর প্রমুখ। আর এই জাহাজ পথ চলা শুরু করলে, ভারত মহাসাগরে চাপে পড়বে চিন, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। আর সমুদ্রে ড্রাগনের চোখে চোখ রাখার এই লড়াইয়ে, নৌবাহিনীকে সাহায্য করছে কলকাতা। নৌসেনার এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, কলকাতার গার্ডেন রিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স সংস্থা এই ধরনের ৪টি গবেষণা জাহাজ তৈরি করছে। আইএনএস সন্ধায়ক তাদের মধ্যে প্রথম। এই প্রকল্পটির দায়িত্বে রয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনীর ওয়ারশিপ ডিজাইন ব্যুরো।

এই জাহাজের অন্তর্ভুক্তিতে, ভারতীয় নৌবাহিনীর শক্তি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, এই জাহাজের প্রাথমিক ভূমিকা হবে বন্দরের দিকে যাওয়ার রুটগুলির সম্পূর্ণ উপকূলীয় এবং গভীর জলের হাইড্রোগ্রাফিক সমীক্ষা করা। এই জাহাজ শিপিং রুট নির্ধারণের কাজও করবে। প্রতিরক্ষা ও অসামরিক ব্যবহারের জন্য মহাসাগরীয় এবং ভূ-পদার্থ সংক্রান্ত তথ্যও সংগ্রহ করবে। পাশাপাশি, বিভিন্ন ধরনের নৌ অভিযান চালাতেও সক্ষম এই গবেষণা জাহাজ। জাহাজটির ওজন প্রায় ৩৪০০ টন এবং এটি দৈর্ঘে প্রায় ১১০ মিটার। ডিজিপিএস লং রেঞ্জ পজিশনিং সিস্টেম, ডিজিটাল সাইড স্ক্যান সোনার, গভীর ও অগভীর জলের মাল্টি-বিম ইকো-সাউন্ডার, স্বায়ত্তশাসিত আন্ডারওয়াটার ভেহিকেল, দূর চালিত যান, তথ্য সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরণের ব্যবস্থা-সহ বিভিন্ন অত্যাধুনিক হাইড্রোগ্রাফিক সরঞ্জাম রয়েছে জাহাজটিতে। সবথেকে বড় কথা, এই জাহাজে ব্যবহৃত সামগ্রীর ৮০ শতাংশই দেশিয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *