দেশ মজে রাজনীতির উত্তাপে, ৮০০-র গণ্ডি!ছুঁল বাঙালির হেঁশেলের জিরার কেজি

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : আদা, টমেটো, লঙ্কার আকাশছোঁয়া দাম নিয়ে হইচই কম হয়নি। তারই মাঝে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের উত্তাপ এখনও অব্যাহত। বিজেপি বিরোধী শক্তি মিলিতভাবে ‘ইন্ডিয়া’ জোট গঠন করেছে। প্রধানমন্ত্রী কড়া ভাষায় জোটকে কটাক্ষ করেছেন। তুলকালাম হয়েছে লোকসভা, শোরগোল পড়েছে রাজ্য বিধানসভায়। ২০২৪-এ লোকসভা নির্বাচন। জাতীয় ও রাজ্য স্তরে রাজনীতি নিয়ে যখন সকলেই মাতোয়ারা, এরই ফাঁকে রান্না ঘরে ফের আগুন লেগেছে।

সরকারের যেন কোনও হুঁশ নেই। এবার জিরার ঝাঁঝে গৃহিনীদের অবস্থা কাহিল। হেঁশেলের অতিপ্রয়োজনীয় এই মশলার দাম ধরাছোঁয়ার বাইরে। পোস্তায় পাইকরি দামই পৌঁছে গিয়েছিল প্রতি কেজি ৮২০ টাকা। পাইকরি দর এখন একটু কমলেও খুচরো বাজারে এখনও জিরার দর প্রতি কেজি প্রায় ৮০০ টাকা।

মূল্যবৃদ্ধি থেকে রেহাই নেই সাধারণ মানুষের। যখন কোনও কিছুর দাম বাড়তে থাকে তা সর্বোচ্চ শিখরে না পৌঁছালে টের পায় না কোনও সরকার! তারপর কিছুটা দাম কমে স্থির হয়ে যায়। পুরনো দামে ফেরা আর সম্ভব হয় না। পোস্তর এখন যেমন অবস্থা। ওয়েস্ট বেঙ্গল ভেন্ডর অ্যাসোসিয়েশনের হাওড়া জেলার সভাপতি চন্দন চক্রবর্তী বলেন, ‘সম্প্রতি জিরার পাইকরি দাম পৌঁছে গিয়েছিল প্রতি কেজি ৮২০ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কুইন্টাল ৮২,০০০ টাকা। এখন পাইকরি রেট ৬২০টাকা। জিরে আসে গুজরাট ও রাজস্থান থেকে। রাজস্থানে এবারে ফলন কম হয়েছে। আর গুজরাটে বেশ কিছু জায়গা বন্য কবলিত হয়ে গিয়েছে। তবে এটা কিন্তু জিরার মূল্য বৃদ্ধির ফ্যাক্টর নয়। সিন্ডিকেট করে বাজারটা মনোপলি করে ফেলছে এক শ্রেণির পাইকরি ব্যবসায়ী। জিরে আজ থেকে এক বছর আগে প্রতি কেজি ১২০ টাকায় নেওয়ার লোক ছিল না। আজ জিরে এই পর্যায়ে চলে গিয়েছে।’

খুচরো বাজারে কয়েক দিন আগেও জিরার দাম ছিল ৪০০টাকা কেজি। তা এখন দাঁড়িয়েছে ৮০০টাকা কেজিতে। একেবারে দ্বিগুণ। টাস্ক ফোর্সের সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে বলেন, ‘এখন জিরার দাম বেড়ে ৭৫০টাকা কেজি হয়েছে। মূলত রাজস্থান ও গুজরাটে জিরা চাষ হয়। গুজরাটের মান্ডি থেকে রফতানি অনেক হচ্ছে, অথচ উৎপাদন কম। সরবরাহ কম থাকায় দামটা বৃদ্ধি পেয়েছে। একমাস আগেও ৪০০টাকা কেজি ছিল। এই মুহূর্তে সাপ্লাই কম থাকায় কিছু করার নেই। বিষয়টা উর্ধ্ব্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’

জিরা রফতানির সব থেকে বড়বাজার গুজরাটে। রাজস্থান ও গুজরাট সারা ভারতের প্রায় ৯৯ শতাংশ জিরা উৎপাদন হয়। গুজরাটের উনঝা মান্ডিতে জিরার দর চড়তে চড়তে গত জুন মাসে কুইন্টাল প্রতি ৫০হাজার টাকা ছাড়িয়ে যায়। আর দু’দিন আগে এরাজ্যে সেই দর দাঁড়ায় কুইন্টাল প্রতি ৮০ হাজার টাকার বেশি।

মোদ্দা কথা, সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা উৎপাদন না হওয়ার কারণেও যদি একবার মূল্য বৃদ্ধি ঘটে যায় তাহলে আর আগের পুরনো দামে যে তা ফেরে না সেই অভিজ্ঞতা সাধারণ মানুষের আছে। হেঁশেলের গুণে ভরা অতিপ্রয়োজনীয় মশলার দর বৃদ্ধি পাওয়ায় মাথায় হাত সাধারণের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *