নেই কোনো রকম দৃষ্টিশক্তি , জানুন IAS অফিসার প্রাঞ্জলের কঠিন লড়াই সম্পর্কে

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : চোখে দেখতে পান না কিন্তু প্রতিবন্ধকতা কখনওই স্বপ্ন দেখতে বাধা দেয়নি। দৃষ্টিশক্তি না থাকলেও অসম্ভবকে সম্ভব করে আজ তিনি IAS অফিসার। আলাদা করে কোনও কোচিং নেননি। দৃষ্টি নেই! কীভাবে এই সাফল্য পেলেন? এই IAS অফিসারের জীবনের লড়াই শুনলে কান্না পাবে। অনেকেরই মনে হতে পারে এত বড় চাকরি! দৃষ্টি ছাড়া কী করে এত সব ম্যানেজ করেন? চোখের দৃষ্টি না থাক মনের দৃষ্টি দিয়ে যেভাবে সবটা সামলাচ্ছেন জানলে আপনিও কুর্নিশ করবেন। মাত্র ছবছর বয়সেই দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছিলেন প্রাঞ্জল। চোখে দেখতে পান না! কীভাবে আইএএস অফিসার হওয়া সম্ভব? বেশ কয়েকবার অস্ত্রোপচার করেও তাঁর চোখ ফেরাতে পারেননি চিকিৎসকরা। চোখে আলো না থাক, মনের আলোকে কখনও অন্ধকারে ডুবে যেতে দেননি প্রাঞ্জল। মেধা ছিল তাই নিজেকে দুর্বল ভাবেননি। এই মানুষগুলোর কাছে সত্যি মাথা নত করতেই হয়।

মহারাষ্ট্রের উলহাসনগরের বাসিন্দা প্রাঞ্জল। বেশ কয়েকবার অস্ত্রোপচার করেও কোনও লাভ হয়নি। আর পাঁচটা মেয়ের মতো জীবন কাটেনি দুচোখে অন্ধকার নিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন। প্রথমে তিনি মুম্বইয়ের কমলা মেহতা দাদর স্কুল ফর দ্য ব্লাইন্ডে পড়াশুনো করেন। কিন্তু সেখানে প্রতি পদে পদে সমস্যায় পড়তে হয়েছিল তবু হাল ছাড়েননি। উচ্চশিক্ষিত হওয়ার জেদটাই আসল ছিল। পরে তাঁর পরিবার যোগাযোগ করে দৃষ্টিহীনদের জন্য সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের বিশেষ শাখার সঙ্গে সেখান থেকেই রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ডিগ্রি অর্জন করেছেন। দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন নিয়ে স্নাতকোত্তর। এরপর পিএইচডি ও এম.ফিল। চোখে দেখতে পান না তো কী হয়েছে! মনের জোরটাই আসল তা প্রমাণ করে দিয়েছেন মহারাষ্ট্রের এই মেয়ে।

বরাবর অসাধারণ রেজাল্ট করেছেন। তাই পিএসডি, এমফিল অনায়াসেই শেষ করেছেন। ততদিনে ঠিক করে নিয়েছিলেন প্রাঞ্জল। তিনি ভারতের সবচেয়ে কঠিন সরকারি পরীক্ষা ইউপিএসসিতে বসবেন।আইএএস অফিসার হতে চান। যে পরীক্ষায় একবারেই উত্তীর্ণ হওয়া প্রায় অসম্ভব। সব জেনেও শারীরিক প্রতিবদন্ধকতাকে সঙ্গী করেই পরিশ্রম চালিয়ে যান। জানলে আশ্চর্য হবেন ইউপিএসসিও একবারে পাশ করে ফেলেন প্রাঞ্জল ২০১৬-র ব্যাচে প্রাঞ্জল পাতিলের র‌্যাঙ্ক ছিল ৭৭৩। যে পরীক্ষা পাশ করতে অনেকেরই বছরের পর বছর কেটে যায়। তিনি আইএএস এর জন্য আলাদা করে কোনও কোচিং নেননি। চোখে দেখতে পান না বলে নিজে পড়তে পারতেন না। শুনে শুনে মনে রেখেছেন। শুনে শুনেই ইউপিএসসির সব পড়া বুঝে নিতেন। কেরলের এর্নাকুলামে সহকারী কালেক্টর ছিলেন প্রথমে। প্রাঞ্জল পাটিল বর্তমানে তিরুঅনন্তপুরমের সাব-কালেক্টর পুরো কেরালায় দায়িত্ব তাঁকেই দেওয়া হয়েছে। আইএএস হওয়ার স্বপ্ন একদিনও দেখতে ভোলেননি প্রাঞ্জল। আশাও ছাড়েননি। সেজন্যই হয়তো কোনওদিন ইতিহাসের পাতায় নতুন করে লেখা হতে পারে তাঁর লড়াইয়ের কথা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *