বিরোধীরা একইসঙ্গে দোস্তি-কুস্তির কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে মোদীকে পরাজিত করতে

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : পাটনায় বিরোধীদের মহাসম্মেলনে নেতৃত্বের চতুরতা, সৌহার্দ্য, বন্ধন তথা বিরোধী ঐক্যের একটি স্পষ্ট এবং সচেতন প্রদর্শন ধরা পড়েছে। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক খুঁটি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার পর থেকে বিজেপি বিরোধী শক্তির এটাই ছিল সবচেয়ে বড় সমাবেশ। আম আদমি পার্টির অরবিন্দ কেজরিওয়াল ছাড়া প্রায় সব নেতাই এই বৈঠককে ইতিবাচক বলে মনে করেছেন। একইসঙ্গে বিরোধীদের জন্য এই মহাসম্মেলনকে একটি ভাল সূচনা হিসেবেও তাঁরা চিহ্নিত করেছেন।

এই মহাসম্মেলনে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন এবং যাঁরা অনুপস্থিত ছিলেন, তাদের সম্পর্কে অনেক কিছুই বলা যায়। যেমন, কে চন্দ্রশেখর রাও (কেসিআর)। তাঁর ভারত রাষ্ট্র সমিতিতে এই মহাসম্মেলনে কোনও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। সম্মেলনে যোগদানকারী কোনও দল খোলাখুলি আশাও করেনি যে চন্দ্রশেখর রাওকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিরোধী ঐক্য গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন কেসিআর। কর্ণাটকের নির্বাচনের পর আঞ্চলিক রাজনৈতিক পার্টি জনতা দল সেকুলার (ধর্মনিরপেক্ষ) -এর ফলাফল দেখে চন্দ্রশেখর রাও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি লোকসভা নির্বাচনে তেলেঙ্গানায় কোনও জোটে যেতে নারাজ। একাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান।

একইভাবে বিজেডির নবীন পট্টনায়েক, জেডি(এস)-এর এইচডি দেবগৌড়া, বিএসপির মায়াবতী এবং ওয়াইএসআরসিপির ওয়াই এস জগনমোহন রেড্ডি বিরোধী ও বিজেপি- উভয় ফ্রন্ট থেকে সমদূরত্বের নীতি গ্রহণ করেছেন। আর, তাঁরা পাটনায় উপস্থিত ছিলেন না। যদিও তারমধ্যেই বিহারের মুখ্যমন্ত্রী এবং জেডি(ইউ) প্রধান নীতীশ কুমার দাবি করেছেন যে আরও দল ২০২৪ সালের নির্বাচনের ঠিক কাছাকাছি সময়ে বিরোধী শিবিরে যোগ দেবে। নীতীশই ছিলেন এই মহাসম্মেলনের আয়োজক।

তবে, নীতীশ একথা বললেও পাটনায় সমবেত নেতারা যেভাবে ঐক্যের ছবি এঁকেছেন, তাঁদের সামনে কিন্তু আগামীর রাস্তাটা মোটেও সহজ হবে না। বলা ভালো, বেশ কঠিন চ্যালেঞ্জ রয়েছে বিরোধী দলগুলোর সামনে। আর, এই চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোও গভীর সচেতন। বিরোধী দলগুলোর কাছে এই সব চ্যালেঞ্জ রয়েছে মূলত তিনটি রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ, পঞ্জাব এবং উত্তর প্রদেশে। তার মধ্যে প্রথম দুটি বিরোধী শাসিত। আর, তৃতীয় রাজ্য ইউপির ক্ষমতায় আছে বিজেপি।

পশ্চিমবঙ্গ থেকে মহাসম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ প্রচার চলছে। তার মধ্যেও সময় করে তিনি এই মহাসম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। তাতে বিরোধী অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক হয়তো ঝালিয়ে নিতে পেরেছেন। কিন্তু, যে পশ্চিমবঙ্গে তিনি কংগ্রেস এবং সিপিএমের বিরুদ্ধে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, পাটনার সম্মেলনে আবার তাদেরই হাত ধরতে বাধ্য হয়েছেন। ফলে লড়াইটা বিরোধীদের কাছে মোটেও সহজ হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *