অক্ষরগুলি কেন এলোমেলো থাকে মোবাইল, কম্পিউটারের কি বোর্ডে? প্রকৃত রহস্যটা আসলে কি! আজই জেনে নিন

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : প্রথম প্রথম কি বোর্ডে হাত দিয়ে টাইপ করা কি সমস্যার বলুন দেখি। কোথায় কোন অক্ষর রয়েছে তা খুঁজে খুঁজে সাজানো যেন মহা ঝঞ্ঝাটের বিষয়। খানিকটা অভ্যস্ত না হলে কম্পিউটারের কি-বোর্ডে কিছু লেখা যেন রীতিমতো যুদ্ধ করার শামিল। অনেককেই দেখা যায়, অক্ষর খুঁজে খুঁজে এক আঙুলে টাইপ করছেন। একটি বাক্য শেষ করতেই ঘেমে–নেয়ে একাকার। তখন মনে প্রশ্ন জাগে, কম্পিউটার বা স্মার্ট ফোনে অক্ষরগুলো এমন এলোমেলো সাজানো থাকে কেন? এ বি সি ডি পর পর থাকলে অসুবিধাটা কোথায়? টাইপ করা তখন অনেক সহজ হয়, তাই না? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মোটেই তা নয়। তাতে অসুবিধা বাড়তো অনেকটাই। কি হতো? চলুন জেন নেওয়া যাক।

আসলে এলোমেলো মনে হলেও এই কি-বোর্ডের অক্ষরগুলোর ভিন্ন ধরণ আছে। বিশেষ কারণেই এদের এমনভাবে সাজানো হয়েছে। কম্পিউটারের এই টাইপিং-এর জনক আসলে টাইপরাইটার। টাইপরাইটারের কি-বোর্ডের আদলে তৈরি করা হয়েছে কম্পিউটারের কি-বোর্ড। এর আদলেই আবার তৈরি হয়েছে স্মার্টফোনের কি-প্যাড। আসলে ‌কম্পিউটারের কি বোর্ড টাইপরাইটারের কি-বোর্ডের অক্ষর বিন্যাসের মতই। ১৮৭৪ সালে সেই বিন্যাস তৈরি করেছিলেন ক্রিস্টোফার ল্যাথাম শোলস। যা শুরু হয় Q–W–E–R–T–Y, এই ছয়টি অক্ষর দিয়ে। এর জন্য একে কোয়ারটি কি-বোর্ড বলা হয়। ক্রিস্টোফার বলেছিলেন, কী বোর্ডের অক্ষর বিন্যাসের ওপর নির্ভর করে টাইপরাইটারে লেখার স্পিড কেমন হবে।

প্রথম যখন কম্পিউটার তৈরি হয় তখন তার আকার অনেক বড় ছিল। কাজের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সমস্যাও দেখা দিয়েছিল তাতে। তারপর থেকে নানারকম পরিবর্তন এসেছে কম্পিউটারের গঠনে, ব্যবহারে। দৈর্ঘ্যে প্রস্থে যত ছোট হয়েছে, তত তাতে কাজের গতি বেড়েছে। যখন প্রথম কি বোর্ড আবিষ্কার হয়, তখন টাইপরাইটার ছিল একটি মেকানিকাল ডিভাইস। ফলে পাশাপাশি অক্ষর থাকলে জ্যাম হওয়ার সম্ভবনা ছিল। তাই এমন ধরনের ব্যবস্থা করা হয়৷

জেনে রাখুন, A-B-C-D পাশাপাশি থাকলে, লেখার ক্ষেত্রে আমাদের খুব সমস্যা হত। তখন কাজ করতে করতে আমাদের হাতের আঙুল ব্যথা হয়ে যেত। অক্ষর বিন্যাস এলোমেলো বলেই আমরা অনেকক্ষণ ধরে কাজ করতে পারি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্পিড বাড়াতে আর লেখার ক্লান্তি দূর করতেই মূলত অক্ষরগুলো এলোমেলোভাবে সাজানো থাকে। অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা করেই কোয়ারটি কী বোর্ড বেছে নেওয়া হয়েছে। এতেই সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাওয়া যায়। কোয়ারটির মতোই কোয়ারজেড এবং ডেভরাকও বেশ জনপ্রিয়৷ এরপরও নতুন ধরনের লেআউট প্রচলনের চেষ্টা যে হয়নি, তা নয়। তবে কোয়ারটি কি-বোর্ডে আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি। একবার শিখে গেলে এটা বেশ সহজও। অনেকে তখন না দেখেই দিব্যি কি-বোর্ডে ঝড় তুলতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *