কোনো ব্রাহ্মণের মন্ত্রে নয়, অনন্য এই রীতিতেই শতাব্দী প্রাচীন দুর্গাপুজো চলে এগাঁয়ে

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : আর ক’দিন পরেই বাঙালির প্রাণের উৎসব দুর্গাপুজো। দেবী মহামায়ার মর্ত্যে আগমন উপলক্ষ্যে ইতিমধ্যেই সাজো-সাজো রব সর্বত্র। শহর থেকে জেলা, দেবীমূর্তি ও মণ্ডপসজ্জার কাজ চলছে জোরকদমে। সাধারণভাবে মা দুর্গার পুজোয় বসতে দেখা যায় ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের পুরোহিতদের। তবে বাংলার এগাঁয়ের রীতিটা ভিন্ন। অসীম ভক্তি ও অপার শ্রদ্ধায় দেবীর আরাধনায় এখানে অনন্য এক রীতি মানা হচ্ছে দশকের পর দশক ধরে। ব্রাহ্মণের উচ্চারিত মন্ত্রে নয়, মালদার হবিবপুরের কেন্দপুকুর ডাঙাদিঘি গ্রামের দেবীমূর্তির আরাধনা হয় বিশেষ এই রীতি মেনেই।

কী সেই রীতি? এগাঁয়ে ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের পুরোহিতদের নয়, আদিবাসী সম্প্রদায়ের কারও মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমেই পূজিত হন দেবী দুর্গা। মালদার আদিবাসী অধ্যুষিত কেন্দপুকুরের ডাঙাদিঘিতে এই দুর্গাপুজোর বয়স দেড়শো পেরিয়েছে। এখানে টিনের একটি ছাউনি ঘরেই পূজিত হন দেবী মহামায়া। সেই ঘরের মধ্যেই রয়েছে দেবী দুর্গার বেদী। আদিবাসীরা তাঁদের নিজস্ব মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে দেবী দুর্গার আরাধনা করেন।

প্রায় ১৫০ বছরেরও বেশি সময়ের পুরনো ডাঙাদিঘী গ্রামের আদিবাসীদের পুজোকে ঘিরে এখন সাজো-সাজো রব। নিজেদের সম্প্রদায়ের লোকজনদের কাছ থেকে টাকা তুলে পুজো করেন এগাঁয়ের বাসিন্দারা। উৎসবের দিগুলিতে এলাকার গরিব মানুষদের পাত পেড়ে খাওয়ানো ও তাঁদের নতুন জামাকাকড় বিলি চলে।

এই পুজো কমিটির এক সদস্য বাবুল হাঁসদা জানিয়েছেন, তাঁদের এই পুজোর শুরুটা হয়েছিল বাংলাদেশে। এক সময় এই পুজো ছিল পরিবারকেন্দ্রিক। প্রায় ১৫০ বছরের পুরনো এই দুর্গা পুজো। পুজোর প্রচলন করেছিলেন লব হাঁসদা। স্বপ্নাদেশ পেয়েই নাকি দেবী দুর্গার পুজো শুরু করেছিলেন লব হাঁসদা।

তখন বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার নাচোলের হাকরোল গ্রামে থাকতেন লব হাসদাঁ। আজও ধুমধাম করে আদিবাসী সম্প্রদায়ের নিয়ম-নীতি মেনে এখানে দেবী দুর্গার আরাধনা করা হয়। পুজোর চার দিন এখানে পংক্তি ভোজনের আয়োজন থাকে। ব্রাহ্মণ পুরোহিতের বদলে একজন প্রবীণ আদিবাসী তাঁদের নির্দিষ্ট ধর্মীয় রীতি মেনে দেবী দুর্গার আরাধনা করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *