নিরুপায় মা-বাবা দড়ি দিয়ে বেঁধে কাজে যান অসুস্থ ছেলেকে, ঘটনার সাক্ষী আলিপুরদুয়ার

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : রঘু আর পাঁচটা সাধারণ বাচ্চার মতোই ছিল জন্মের পর থেকে। কিন্তু তার মা-বাবা ধীরে ধীরে সমস্যা প্রত্যক্ষ করেন কয়েক বছর পেরোতেই। জড়তা দেখা যায় শরীরের নিম্নাংশে। পরে দুই পায়ে সামান্য শক্তি ফিরে এলেও মুখের ভাষা হারিয়ে গিয়েছে। অভাবের সংসার। কেউ নেই দেখা শোনার। তাই মা-বাবাকে কাজে যেতে হয় ছেলেকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখে। এমনই এক ঘটনার সাক্ষী থাকল আলিপুরদুয়ার ফালাকাটা ব্লকের ধনীরামপুর এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের মেছুয়াধুরা বালাবাথন এলাকা।

রঘুর মা ফুলতি গিরি বলেন, ‘ছেলের জন্মের পর প্রায় সবই স্বাভাবিক ছিল তিন বছর বয়স পর্যন্ত। কিন্তু তার পরেই দেখা যায় সমস্যা হচ্ছে ওর কথা বলার। অবশ হয়ে যায় শরীরের নিচের দিক। পায়ের শক্তি সামান্য পরে ফিরে এলেও আর ফেরেনি মুখের ভাষা। এদিকে ভিক্ষাবৃত্তি করেন ওর বাবা। কিছুই করতে পারিনি ছেলের চিকিত্‍সার জন্য। ছেলের বয়স ১৬। আমি পরিচারিকার কাজ করি। বের হতে হয় দু’জনকেই। তাই কাজে যাই দড়ি দিয়ে তাকে বেঁধে রেখে।’

এদিকে বাবা-মা বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলে রঘুনন্দন একদৃষ্টে বাইরের দিকে তাকিয়ে থাকে। চোখ থেকে বেরিয়ে আসে জল। কিন্তু ক্ষমতা নেই কথা বলার। কিছুই করতে পারে না নিজে থেকে। এভাবে জীবন চলছে দিনের পর দিন। রঘুর বাবা ধরমজিত্‍ গিরি বলেন, ‘পেটের ভাত জোটাবো নাকি ছেলে পাহারা দেব। পেট যে বড়ই বালাই। করোনাকালে ভিক্ষাও দিতে চায় না মানুষ। গেলেই তাড়িয়ে দেয় দূর দূর করে। নিজে হাঁটতেও পারি না শরীর ঠিক না থাকায়। তাই ছেলের চিকিত্‍সা হয় না। এখন ছেড়ে দিয়েছি সব আশাই। তবে ওর কী হবে আমাদের দুজনের কিছু হয়ে গেলে দিন কেটে যায় তা ভাবতে ভাবতেই।’ এই নিরুপায় মা-বাবা তাদের ছেলের চিকিত্‍সার জন্য আবেদন জানিয়েছেন এমনকি সকলের কাছেও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *