সম্পুর্ন বিবস্ত্র করে যৌন হয়রানি দুই মহিলাকে! নিন্দার ঝড় ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই, সরাসরি মোদীকে নিশানা করলো আপ ও কংগ্রেস

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : দু’মাসের বেশি সময় ধরে ধরে জাতিগত হিংসার আগুনে পুড়ছে মণিপুর। একের পর হত্যার ঘটনা সামনে এসেছে। এর মাঝেই একটি ভয়ঙ্কর ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় চাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একদল পুরুষ দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে প্রকাশ্যে যৌন হয়রানি করছে। ঘটনার ভিডিও সামনে আসাআর পর পার্বত্য রাজ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দুই মহিলাকে গণধর্ষণ করা হয় বলেও অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দেন এমনকি নেটিজেনরাও ।

এর পাশাপাশি মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে সামনে এসেছেঅরবিন্দ কেজরিওয়াল থেকে শুরু করে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর প্রতিক্রিয়াও। পাশাপাশি ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন রাহুল গান্ধীও। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে আক্রমণ করেছেন এবং বলেছেন “জোটের ‘ইন্ডিয়া’কে যখন আক্রমণ করা হচ্ছে তখন মণিপুর নিয়ে আমরা চুপ থাকব না”। তিনি লিখেছেন, “প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা এবং নিষ্ক্রিয়তা মণিপুরকে ক্রমশ নৈরাজ্যের দিকে নিয়ে গেছে।

মণিপুরের জঘন্য ঘটনার ভিডিও সামনে আসতেই তেড়েফুঁড়ে আসরে নেমে পড়েছে কংগ্রেস। প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এই ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করে বলেছেন, ‘মণিপুরে মহিলাদের ওপর যৌন নিপীড়নের যে ছবি ছড়িয়ে পড়েছে তা নিন্দনীয় ও বর্বরোচিত। নারী নির্যাতনের এই নৃশংস ঘটনার নিন্দারও কোন ভাষা নেই। হিংসার ঘটনার সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হতে হচ্ছে মহিলা ও শিশুদের। মণিপুরে শান্তির প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় আমাদের সকলকে এক কণ্ঠে হিংসার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে হবে। মণিপুরের পরিস্থিতি দেখেও কেন চোখ বুঝে বসে আছে কেন্দ্রীয় সরকার, প্রধানমন্ত্রী? এ ধরনের ছবি ও হিংসার ঘটনা কী তাদের নাড়া দেয় না’?

আপ প্রধান তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, “মণিপুরের ঘটনা অত্যন্ত লজ্জাজনক এবং নিন্দনীয়। এই ধরনের জঘন্য কাজ ভারতীয় সমাজে মেনে নেওয়া যায় না। মণিপুরের পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। আমি প্রধানমন্ত্রীকে মণিপুরের পরিস্থিতির দিকে নজর দেওয়ার জন্য আবেদন করছি। এই ঘটনার ভিডিওতে যে দোষীদের দেখা যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। ভারতে এই ধরনের অপরাধীদের থাকার কোন জায়গা নেই”। আপের তরফে আরও বলা হয়েছে, ‘রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের নিষ্ক্রিয়তা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। আমরা আবারও প্রধানমন্ত্রীকে মণিপুরের সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে হস্তক্ষেপ করার জন্য অনুরোধ করছি’।

বৃহস্পতিবার ‘ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডারস ফোরাম’ (আইটিএলএফ) এর প্রস্তাবিত মার্চের একদিন আগে ভিডিওটি সামনে এসেছে। ITLF-এর জারি করা বিবৃতি অনুসারে, ঘটনাটি ৪ মে ইম্ফল থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে কাংপোকপি জেলায় ঘটেছে। আইটিএলএফ-এর একজন মুখপাত্রের মতে, ‘ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে যে বেশ কিছু মানুষ ২ অসহায় মহিলাকে প্রকাশ্যে শ্লীলতাহানি করছে এবং তাঁরা কাঁদছেন, ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছেন। নির্যাতনের এই নৃশংস ঘটনার বিষয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। এই জঘন্য কাজের নিন্দা জানিয়ে এক বিবৃতিতে আইটিএলএফ মুখপাত্র দাবি করেছেন, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার, জাতীয় মহিলা কমিশন বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

উল্লেখ্য, মণিপুরে তফসিলি উপজাতি (এসটি) মর্যাদার দাবিতে মেইতি সম্প্রদায়ের দাবির প্রতিবাদে ৩রা মে পার্বত্য জেলাগুলিতে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৫০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *